ইমদাদুল হকের স্মরণীয় সাহিত্যকর্ম তাঁর একমাত্র উপন্যাস ‘আবদুল্লাহ’। বহুদিন শয্যাশায়ী থাকার কারণে ‘আবদুল্লাহ’ তিনি শেষ করে যেতে পারেননি। বাংলা সাহিত্যে একজন শক্তিশালি উপন্যাসিক হওয়ার সম্ভাবনা তাঁর অকাল মৃত্যু নস্যাৎ করে দেয়। ‘আবদুল্লাহ’ সম্পন্ন করেন তাঁর বন্ধু আনোয়ারুল কাদির, যিনি ছিলেন একজন প্রগতিশীল প্রাবন্ধিক ও শিক্ষাবিদ।
‘আবদুল্লাহ’র বিষয়বস্তু শতাব্দীর প্রথম দিকে উদীয়মান বাঙালী মুসলমান গ্রামীন মধ্যবিত্তসমাজ। গ্রামের কৃষিজীবি মুসলমানরা শিক্ষা লাভ করে এগিয়ে আসতে চাইছে অথচ তাদের সামনে বিচিত্র বাধা; আশরাফ আতরাফ, ভেদাভেদ, পর্দাপ্রথা, পীরবাদ, ধর্মীয় গোঁড়ামি, সামাজিক কুসংস্কার, ইংরেজি শিক্ষার প্রতি অনাগ্রহ প্রভৃতি। অর্থনৈতিক পশ্চাৎপদতা তো আছেই। ‘আবদুল্লাহ’ যখন রচিত হয় তখন বাংলা কথাসাহিত্য উঠে গেছে অনেক উচুতে। রবীন্দ্রনাথ ও শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়সহ বহু শক্তিশালি কথাশিল্পী প্রবলভাবে সৃষ্টিশীল। শিল্পের দিক থেকে ‘আবদুল্লাহ’ বাংলার প্রথম শ্রেণির উপন্যাসের সমান্তরাল নয়, কিন্তু মুসলমান ঔপন্যাসিকের মধ্যে কাজী ইমদাদুল হক প্রথম সারির
প্রমাণের আলোকে তাঁর জীবন চরিত হিসেবে তুলে ধরা হয়েছে। সর্বশেষ নবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) এর পবিত্র জীবনীতো এমন একটি বিষয় যে সম্পর্কে প্রথম যুগ থেকে বর্তমানকল পর্যন্ত অব্যাহতভাবে লেখা হচ্ছে এবং উম্মতে মুহাম্মাদী এটিকে নিজের একটি অবশ্য পালনীয় দায়িত্ব হিসেবে গ্রহণ করেছে। এ বিষয়ের উপর আরবী ভাষার পরে উর্দু ভাষায় সংক্ষিপ্ত, মধ্যম ও বৃহৎ আকারের বহু গ্রন্থ রচিত হয়েছে। এই গ্রন্থে কেবল ঘটনাবলীর সেই অংশ সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছ- কুরআনে হাকীমের সাথে তার সরাসরি সম্পর্ক রয়েছে। অন্যথায় এ কথা সুস্পষ্ট যে, মহানবী (সা.) এর জীবনের প্রতিটি দিক কুরআনে হাকীমের এক একটি জীবন্ত ও জাগ্রত প্রতিচ্ছবি এবং তাঁর মহান চরিত্র ও কার্যাবলি কুরআনের আয়াতসমূহের ব্যাখ্যা প্রদান করে।
Title | আবদুল্লাহ উপন্যাস |
Author | কাজী ইমদাদুল হক |